হতাশা থেকে মুক্তির উপায়:নতুন ভাবে জীবন শুরু করার কৌশল
হতাশা বর্তমান সমাজে একটি বড় ধরণের সমস্যা।বর্তমান সময়ে যুব সমাজের মূল সমস্যা হলো হতাশায় থাকা।সবাই চাই হতাশা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে কিন্তু পারে না।প্রতিদিনের চাপ, কাজের ব্যস্ততা, ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলা, আর্থিক সমস্যা, সম্পর্কের টানাপোড়েন সবকিছু মিলে আমাদের জীবনকে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়।
কিন্তু হতাশা মানে এই নয় যে জীবন শেষ। হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, যদি সঠিক পদক্ষেপে নেওয়া যায় তাহলে এটা থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পাওয়া যায়।
মানুষ কেন হতাশায় ভোগে
হতাশা থাকার অনেক কারণ আছে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণ কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে:
- আর্থিক সমস্যা: মানুষ হতাশা ভোগার প্রথম কারণ হলো অর্থের অভাব। টাকা পয়সায় জন্য মানুষ হতাশায় ভোগে, টাকা পয়সা ছাড়া মানুষের মূল্যহীন হয়ে যায়। আপনি যদি টাকা পয়সার কারণে হতাশায় আছেন তাহলে এটা থেকে বাহির হওয়ার একটাই উপায় হলো আপনার থেকে টাকা আয় করতে হবে। টাকা আয় অনলাইন বা অফলাইনে দুইভাবে করা যায়। আমাদের ওয়েবসাইট আয় করার বিভিন্ন উপায় পাওয়া পাবেন।
- সম্পর্কের জটিলতা: সম্পর্কের টানাপোড়েন মানসিক চাপের একটি বড় কারণ। মানুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরী হয় আবার বিচ্ছেদ হয় সম্পর্ক তৈরী হলে মানুষ খুশি হয়। যতদিন সম্পর্ক ভালো থাকে ততদিন মানুষ খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় বিচ্ছেদ এর সময় মানুষ চাপে মধ্যে পড়ে হতাশায় ভুগে থাকে। সম্পর্কে বিচ্ছেদে মানুষ ভালো মতো নিতে পারে না তার জন্য মানুষকে অনেক মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়। যদি আপনি ও এটার জন্য মানসিক ভাবে ভুক্তভোগী তাহলে এটা থেকে বাহির হতে চেষ্টা করুন।
- কাজের চাপ: পেশাগত জীবনে কাজের চাপ হলো অনেক কষ্টের।বসের ঝামেলা, বসের বকাবকি কার শুনতে ভালো লাগে বলুন।আপনি যদি অফিশিয়াল কাজে জন্য নিজেকে হতাশাজনক মনে করেন তাহলে ৩-৪ দিনের ছুটি নিয়ে বাহির হয়ে পড়ুন সাগর আর পাহাড় দেখতে কক্সবাজারের। একটা ভালো ভ্রমণ আপনাকে এই হতাশা থেকে মুক্ত করতে সাহায্যে করবে। চাকরিতে চাপ থাকবে তাই বলে মানষিক ভাবে ভেঙ্গে গেলে হবে না। এটা থেকে বাহির হয়ে আসতে হবে।
- নিজের প্রতি প্রত্যাশা: অনেক সময় আমরা নিজ থেকে অনেক কিছু আশা করি কিন্তু সেই পরিমাণে ফল পাই না। ফল কেমনে পাবো আমরা নিজেকে তো সুপারম্যান ভেবে বসেছি। সুপারম্যান থেকে যা আশা করি সেটা না পেলে তো হতাশা হয়ে যাই।এটা করা যাবে না, নিজের পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে তাহলে নিজেকে সুপারম্যান ভাবা যাবে। নিজেকে অন্যার সাথে তুলনা করবেন না এটা হলো বোকামি। আপনাকে দিয়ে যা হবে না সেটার আশা করবেন না, আশা না করেও অনেক কিছু করা যায়।
অতিরিক্ত হতাশা মানুষকে পাগল করে দেয়
হতাশা যদি অপ্রতিরোধ্য পর্যায়ে চলে যায়, তবে এটি মানসিক ভারসাম্যহীনতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। সঠিক সময়ে পদক্ষেপ না নিলে হতাশা মানুষকে বিভ্রান্ত, একাকী এবং মানসিক ভারসাম্যহীন করে তুলতে পারে। তাই, হতাশার লক্ষণ দেখা দিলে তা অগ্রাহ্য না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
হতাশা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ও অনেক সহজ। হতাশার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেই সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নিজের যত্ন নেওয়া, ইতিবাচক চিন্তা করা, এবং প্রয়োজন হলে ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া—এই সবকিছুই আপনাকে হতাশার কবল থেকে মুক্তি দিতে সাহায্যে করবে।
আরও পড়তে পারেন:
৭ টি কমন সফল ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য
অতিরিক্ত হতাশা মানুষিক রোগের কারণ
যদি হতাশা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয় এবং কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এটি মানসিক রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী হতাশা অনেক সময় ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি এবং সাইকোসিস এর মত গুরুতর মানসিক সমস্যা তৈরি করে। এমনকি অতিরিক্ত হতাশা মানুষকে জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক করে তুলতে পারে এবং অনেক সময় এটি আত্মহত্যার মতো চরম পদক্ষেপে ঠেলে দেয়।
কি করলে হতাশা থেকে মুক্তির উপায়পাওয়া যাবে?
হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হতে পারে, কিন্তু অসম্ভব নয়। কিছু সহজ এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এটা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।আমরা মানুষ কোন রোবট না যে এগুলো থেকে সহজে বাহির হতে পারবো। সহজে বাহির হওয়া যায় না তবে ধীরে ধীরে এগুলো থেকে বাহির হওয়া যায় সময় সাপেক্ষে। এই পদক্ষেপে গুলো গ্রহণ করুণ দেখবেন আপনি বাহির হতে পারবেন এই হতাশা থেকে।
- নিজেকে সময় দিন: হতাশা কাটিয়ে উঠতে ধৈর্য্য ধরুন এবং নিজেকে সময় দিন।সময়ের মূল্য অপরিসীম,সময় থাকতে নিজেকে শুধরিয়ে নেওয়া অথবা যে কারণে আপনি হতাশায় আছেন সেটাকে কাটিয়ে তুলতে সময় দিতে হবে। আগে সমস্যা আইডেন্টিটি করতে হবে তাঁর পর সমস্যা সমাধান করতে হবে।
- অন্যদের সাথে কথা বলুন: যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় কথা বলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বন্ধু, পরিবার সদস্যদের আপনার সমস্যার কথা বলুন।দেখবেন আপনার সমস্যা সমাধান করতে তারা সহোযোগিতা করবে। পরিবার হলো আপনজন, তারা সবকিছুর সমস্যার সমাধান করে ফেলে নিমিষেই।আপনি যাদেরকে ভরসা করেন তাদের সাথে আলোচনা করুণ। কথা বললেই তো সমস্যা সমাধানের দিকে যাবে।
- ব্যায়াম করুন: কথায় আছে আহার করো পরিমাণ মতো শারীরিক ব্যায়াম করো নিয়মিত। ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়ামের কারণ আমাদের শরীরের অনেক হরমোন পরিবর্তন হয় যা আমাদের কে পরিবর্তন এবং আমাদের লক্ষ্য কে অর্জন করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট পর্যন্ত ব্যায়াম করুন, দেখবেন এটা আপনার ডেইলি রুটিন মধ্যে চলে আসবে।
- নিয়মিত খাবার খাওয়া: আমরা হতাশায় থাকলে খাবার খেতে ভুলে যায়। খাবার আমাদের শরীরের শক্তি যোগায়।শক্তি না থাকলে আমরা কোন কিছু করতে পারবো না।নিয়মিত খাবার না খেলে শরীরে সঞ্চারিত কম হবে।আপনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়বেন। যতই আপনি মানসিক ভাবে দূর্বল হোন না কেন খাবার খাওয়া কমাবেন না।
- বই পড়া : বই পড়লে মস্তিষ্কের ব্যায়াম হয়। আপনার মস্তিষ্ককে শক্তিশালি করতে হলে বই পড়ার বিকল্প নাই।বই পড়লে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন, বই আমাদের বন্ধু।বইয়ের সাথে সম্পর্কে করলে দেখবেন অনেক কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করবে।
- আত্মবিশ্বাস বাড়ান: নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং প্রতিনিয়ত নিজেকে উৎসাহিত করুন। আত্নবিশ্বাসী হওয়া মানে আপনি হতাশা থেকে বাহির হওয়া।নিজেকে আত্নবিশ্বাসী করে তুলন তার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ব্লগপোস্ট এবং বই পড়ে এটা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি কোন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যান তাহলে সেখানেও আপনাকে আত্নবিশ্বাসী হতে হবে। আত্নবিশ্বাসী বাড়াতে হলে নিজেকে মোটিভেশনাল রাখতে হবে।
- নতুন শখ তৈরী করা: নতুন কিছু শেখা বা একটি শখ শুরু করা আপনার মনকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখতে সহায়তা করবে। শখ অনেক কিছু হতে পারে, বই পড়া, ব্যায়াম করা, বাগান করা, পোষাপাখি পালন বা পোষা প্রাণী পালন যে কোন কিছু হতে পারে। নতুন শখ আপনাকে নতুন ভাবে বাঁচতে শিখাইবে।
- পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত বিশ্রাম না হলে হতাশা আরো প্রকট হয়ে উঠতে পারে, তাই পর্যাপ্ত ঘুমান।প্রতিদিন একজন মানুষকে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে ঘুমের বিকল্প নাই। ঘুম মানুষকে সকল ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।নিজের মস্তিষ্ককে পরিষ্কার রাখতে চাও তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাণ।
- ভ্রমণ করুন: ঘুরতে যাওয়া মানে সকল ক্লান্তি দূর করে অনেকে দূরে হারিয়ে যাওয়া। মন ফ্রেশ হতাশাও ফ্রেশ। একটা ভ্রমণ একজন মানুষকে অনেক দূরে হারিয়ে ফেলে। কোথাও ঘুরতে গেলে আপনার মন এমনিতেই পরিষ্কার হবে যদি ঘুরার সঙ্গী আপনার কাছের বন্ধু হয়। বন্ধু মানে ঘুরাঘুরি আড্ডার জোয়ার। এই জোয়ারের ভেসে যায় বন্ধুর সাথে কাটানো মূহুর্ত।
আমাদের ফেসবুকে পেইজ জয়েন করতে পারেন কোন কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে কমেন্ট অথবা ইনবক্সে করুণ আমাদের কে