জীবন বদলে দেওয়ার মতো মোটিভেশনাল ছোট গল্প
শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল ছোট গল্প যা আপনার মনকে ভালো করতে সাহায্য করবে? আমাদের সকাল এমন এক মোটিভেট গল্প দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, যাতে করে পুরো দিনটা ভালো যায় আমাদের।
নিজেকে শক্তি শালী করতে হলে শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল গল্পের বিকল্প নেই।মোটিভেশান গল্পই আপনার মন ভালো করতে পারে। আজকে আপনাদেরকে কয়েকটি ছোট ছোট অনুপ্রেরণামূলক গল্প শেয়ার করবো। যাতে করে এই গল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন ।
মন ভালো করার জন্য ছোট গল্প হজম করা খুব সহজ। গল্পই মানুষের জীবন পরিবতর্নে বড় ভূমিকা রাখে। আশা করি এই গল্প গুলো শুনতে খুব ভালো লাগবে আপনাদের। এই শিক্ষনীয় গল্প থেকে কিছুনা কিছু শিখার আছে।
এই গল্প গুলো সত্য গল্প হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসে না। এই গল্প থেকে আমরা কি শিখলাম তা হলো বড় কথা।
যাইহোক, আজকে যে গল্পগুলির কথা বলছি সেগুলি এতই শক্তিশালী এবং অনুপ্রেরণামূলক যে সেগুলির মধ্যে এমন কিছু গল্প আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে। এমনকি কখনও কখনও আপনাকে বাকরুদ্ধ করে দিবে।
শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল ছোট গল্প ও শিক্ষামূলক ঘটনা
ছোট্ট কালের একটা শিক্ষা সারাজীবন মনে রাখা (হাতির দড়ির বিশ্বাস)
কোন একসময় একজন ভদ্রলোক একটি সার্কাস পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো এবং সে খেয়াল করলো যে হাতিগুলোকে খাঁচায় ভিতরে রাখা হয়নি বরং শিকল দিয়েও বেধে আটকে রাখা হয়নি। হাতটিকে বাধার জন্য ব্যববহার করা হচ্ছে ছোট একটা দড়ি। সেটা দেখে ওই ব্যক্তিটি মনে প্রশ্ন জাগালো কি করে এটা সম্ভব।
ছোট্ট একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলে সবার মনে প্রশ্ন আসবে, এতো বড় হাতিকে ছোট্ট একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা কি সম্ভব। অবশ্যই না!
ওই লোকটি হাতিদের দিকে তাকালেন এবং তিনি সম্পূর্ণরূপে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। এবং মনে মনে ভাবতে লাগলেন হাতিটি কেন এই সাকার্স থেকে পালাতে চেষ্টা করতেছে না। হাতিটি চাইলে নিমিষে এই রশিটি ছিঁড়ে পালাতে পারে তার এই শক্তি আছে ছিঁড়ে ফেলার, কিন্তু এই চেষ্টা করে না কেন?
ওই লোকটি অনেক কৌতূহলী হয়ে এবং উত্তর জানতে চাওয়ার জন্য, তিনি ওই সার্কাসের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং ওই হাতির পাশে থাকা একজন প্রশিক্ষককে জিজ্ঞাসা করলেন কেন হাতিরা সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং কখনও পালানোর চেষ্টা করেনি।
প্রশিক্ষক উত্তর দিলেন ”যখন তারা খুব ছোট এবং অনেক ছোট হয় আমরা তাদের বেঁধে রাখার জন্য একই আকারের দড়ি ব্যবহার করে থাকি এবং ছোট বয়সে হাতিদেরকে ধরে রাখার জন্য এই ছোট্ট দড়িটি যথেষ্ট। ছোট্ট কালে হাতিটি অনেক নড়াচড়া করে রশিটা ছিঁড়ার জন্য কিন্তু পারে না।
ঐই যে ছোট কাল থেকে বিশ্বাস জন্ম নিয়েছে তার দ্বারা এই দড়িটা ছিঁড়া সম্ভব না। এই বিশ্বাস এর সাথে এই হাতিগুলো বড় হয় এক বিশ্বাস তাদেরকে সারাজীবন এর মতে ছোট দড়িতে আবদ্ধ করে রেখেছে। তারা বিশ্বাস করে যে দড়ি এখনও তাদের ধরে রাখতে পারে, তাই তারা কখনই দড়ি ছিঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে না।যদি হাতিরা চাইলে এটা করতে পারতো,খুব সহজে কিন্তু তারা করে না।
আরও পড়তে পারেন:
সফলতা কি? মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ভিতরে লুকিয়ে থাকে সফলতা
কিভাবে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা যায়
ছোট কাল থেকে যে ছোট একটা দড়ি দিয়ে এই হাতি গুলোকে বেঁধে রেখেছিল, এই দড়ি দিয়ে হাতি গুলো কে এখনো বেঁধে রাখা হয়েছে।
হাতিদের মুক্ত না হওয়ার এবং সার্কাস থেকে না পালানোর একমাত্র কারণ হল যে সময়ের সাথে সাথে তারা এই বিশ্বাসটি গ্রহণ করেছিল যে এটি সম্ভব নয়।তারা এই দড়িটা ছিঁড়তে পারবে না। বিশ্বাস হলো সবচেয়ে বড় জিনিস আপনার মনের মধ্যে যদি বিশ্বাস না থাকে তাহলো আপনি কিছু করতে পারবেন না।
হাতিটার এই আচরণ আমাদের শেখায়, আমাদের বিশ্বাসই আমাদের ক্ষমতা নির্ধারণ করে। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা কিছু করতে পারব না, তাহলে আমরা কিছুই করতে পারবো না।কারন আমাদের মধ্যেই ছোট কাল থেকে এই বিশ্বাস জন্ম নিয়েছে আমাদের দ্বারা কিছু হবে না। এই ধারণা থেকে বাহির হয়ে আসতে হবে না হয় হাতিটির মতো আমরাও ছোট একটা দড়ির ভিতরে আটকে থাকবো।
এই গল্পের থেকে আমাদের শিক্ষা:
এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ আমাদের আটকে রাখার চেষ্টা করুতে পারে। কোন এক ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে তুমি পারবেন না তোমার দ্বারা কিছু হবে না। হ্যান ত্যান ঢুকিয়ে দিয়ে আপনার শক্তি অচল করতে চেষ্টা করবে আপনাকে এই শক্তি থেকে বাহির হয়ে আসতে হবে তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন।
না পারার খোলস থেকে আপনি বাহির হয়ে আসুন। দেখবেন আপনি সব কিছু করতে পারবেন। সবসময় হ্যা বলতে শিখবেন না, না বলতে ও শিখতে হবে তাহলেই সামনে আগানো সম্ভব।
মনের মধ্যে এই বিশ্বাস টা রাখুন যে, আপনি যা অর্জন করতে চান তা সম্ভব। বিশ্বাস করুন নিজের উপর আপনি সফল হতে পারবেন। আসলে বিশ্বাস হলো অর্জনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আপনি ডিপ্রেশনে ভুগবেন, আপনি অন্ধকারে থাকবেন এইখান থেকে বাহির হতে হবে।
সৃজনশীল চিন্তা মানুষকে পরিবর্তন করে?
অনেকদিন আগের কথা, একটি ছোট্ট গ্রামে এক যুবক বাস করতো যার নাম ছিল করিম। করিম ছিল সৎ ও পরিশ্রমী, কিন্তু তার গ্রামবাসীরা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করত কারণ সে ছিল কিছুটা স্বপ্নবিলাসী। সে সবসময় তার মাথায় নানা ধরনের নতুন নতুন চিন্তা নিয়ে মগ্ন থাকতো। এলেকার সবার মনে করতো এই ছেলে শুধু স্বপ্ন দেখে বাস্তবতা মানে না। তাকে দিয়ে কখনো কোন কাজ করা সম্ভব না।
একদিন, গ্রামে এক ভয়ানক খরা দেখা দিলো। গ্রামের ফসল নষ্ট হতে শুরু করল এবং মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়লো। সেই সময়, করিম তার সৃজনশীল চিন্তা ব্যবহার করে একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি করল। সে গ্রামের বাইরে থেকে নদীর পানি তার গ্রামে আনার জন্য একটি সেচব্যবস্থা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিল। গ্রামের মানুষ প্রথমে তার পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দেয়নি, কিন্তু করিম নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে থাকল।
কয়েক মাসের পরিশ্রমের পর, করিম সফলভাবে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করল। নদীর পানি গ্রামের ফসলের মাঠে চলে আসলো এবং ফসল পুনরায় সবুজ হয়ে উঠল। গ্রামের মানুষ অবাক হয়ে দেখল,
যে যুবককে তারা কখনো গুরুত্ব দেয়নি, সেই সৃজনশীল চিন্তা ও পরিশ্রম দিয়ে পুরো গ্রামকে বাঁচিয়ে তুলেছে।
এই গল্পটি আমাদের শেখায়, সৃজনশীল চিন্তা এবং উদ্যোগ মানুষকে, এমনকি পুরো সমাজকে পরিবর্তন করতে সক্ষম। করিম তার সৃজনশীলতার মাধ্যমে গ্রামবাসীর জীবন পাল্টে দিয়েছিল, আর প্রমাণ করেছিল যে নতুন চিন্তা সবসময়ই নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়।
আপনাকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য তো আমরা আছি। আপনি আমাদের ওয়েবসাইট সকল ধরনে কনটেন্ট পাবেন যা আপনার মনের হতাশ দূর করতে সাহায্য করবে। আপনার ফাইন্যান্স সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।