সফলতার গল্প
| |

জ্যাক মা: একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষের সফলতার গল্প

সফলতার গল্প আমরা কম বেশি জানি, আলিবাবার নাম আমাদের অনেকেই জানা। একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষের সফলতার গল্প শুনবো আজকে যার নাম জ্যাক মা। যে ব্যক্তি চীনের ইন্টারনেট দুনিয়া কিং। একটি সফলতার গল্প যা আপনার চিন্তাভাবনার পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।

পরিবর্তন এর জন্য একজন ব্যাক্তিই যথেষ্ট আপনি, আমি, আপনি যে কেউ এই পরিবর্তন আনতে পারে। আমরা অনুপ্রেরণা ও সফলতার গল্প পেতে বাস্তব জীবনে আমরা এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে থাকি। প্রতিদিন আমরা পরিচিত অপরিচিত লোকের সাথে দেখা করে থাকি সল্প মাত্র কয়েক জন থেকে আমরা অনুপ্রেরণা পায়।

জ্যাক মার সফলতার গল্প আর ছোট কালের নায়ক জসিম এর গল্প কিন্তু এক না। আমরা ছোট্ট কালে, নায়ক জসিম কে দেখেছি তার পরিবারের জন্য সে ঠেলাগাড়ি পর্যন্ত চালিয়েছে। নায়িকা সাবানাকে দেখেছি সে সবসময়ই সেলাই মিশন নিয়ে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতো তার পারিবারকে ছোট্ট খাটো সহোযোগিতা করার জন্য কোন বড় মসিবত থেকে।এক কথায় বলা যায় জীবনের সফলতার গল্প এগুলো, তবে এগুলো বাস্তব জীবনের সাথে কোন মিল নেই।

এই ধরনের গল্পে সান্ত্বনা পাই। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ধরনের বাস্তবিক অনুপ্রেরণামূলক গল্প আমাদের মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং আমাদেরকে অনুপ্রেরণা পেতে সাহায্য করে থাকে।

আজকে একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষের সফলতার গল্প নিয়ে আলোচনা করব। একজন ব্যক্তির যে কিনা চীনের সমগ্র অর্থনীতি এবং ইন্টারনেট শিল্পকে একেবারে পরিবর্তন এনে দিয়েছে। যার নাম জ্যাক মা আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা ।

পরিশ্রমী মানুষের জীবনী জ্যাক মা ?

জ্যাক মা কে? জ্যাক নাম টা শুনলে মনে হবে এটা ইউরোপ কিংবা আমেরিকার কোন ব্যক্তির নাম। আসলে এটা পশ্চিমাদের নাম না এটা হলো চীনের এমন একজন ব্যাক্তির নাম যে চীনের অর্থননীতিকে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।

‘জ্যাক মা’ এর পুরো নাম Mǎ Yún থেকে Jack Ma, জ্যাক ছোট কাল থেকে ট্রাবেল ইন্ডাস্ট্রির সাথে জড়িত ছিল। আমেরিকার থেকে আগত বিভিন্ন পর্যটকদেরকে তিনি দর্শনিয় জায়গায় ঘুরাঘুরি করাতো। তার নামটি চাইনিজ হওয়াতে অনেকে এটা উচ্চারণ করতে পারতো না। সে জন্য এক আমেরিকান দম্পতি তার নাম ” মা ইউন” থেকে জ্যাক মা রেখেছে যাতে তারা সহজে ওর নাম ধরে ডাকতে পারে।

পরিশ্রমী মানুষের জীবনী জ্যাক মা

সফলতার গল্পের গুরুত্ব অনেক, সফলতার জন্য আপনাকে বড় বড় পাহাড় পাড়ি জমাতে হবে না। আপনার আশেপাশে দেখতে পারবেন।

জ্যাক মা এর নামকরণ তো হলো। আমরা দারাজ এর নাম শুনেছি এটা ও জ্যাক মা এর একটা প্রতিষ্ঠান। বিগেস্ট জায়েন্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা এবং alipay এর প্রতিষ্ঠাতা আলি পে অনলাইনে মালিক হলো জ্যাক মা আলি পে হলো অনলাইনের পেমেন্ট কাজে ব্যবহত হয়। বিকাশের মতো করে কাজ করে।

সফলতার গল্প কাকে বলে উদাহরণ দাও?

জ্যাক মা এর কোম্পানি $১৫০ বিলিয়ন ডলার আইপিও নিয়ে চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের নাম্বার ওয়ানে আছে।আপনার মনে হতে পারে এতো বড় ধনী একজন মানুষ কেমনে কি করে গরীব হতে পারে।

সত্যি বলতে জ্যাক মা একটা গরীব পরিবারের সন্তান ছিলো। তার পরিকল্পনা অকল্পনীয় শ্রম থাকে জ্যাক মা এ পরিণত করেছে আজকে। আপনি যদি মনে করে থাকেন জ্যাক মা কোনদিন অন্ধকারে দেখেন নাই তাহলো আপনি ভুল এর মধ্যে আছেন। জ্যাক মা আজকে এই পজিশনে আসতে তাঁকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে।

ত্যাগের বিনিময়ে প্রচুর সাধনায় আজকে জ্যাক মা আলিবাবার মতো একটা কোম্পানির মালিক। আপনার মনে হতে পারে এটা কি আমাদের জন্য মোটিভেশনাল স্টোরি হতে পারে। অবশ্যই এটা আপনাদের জন্যে মোটিভেট হতে পারে

কষ্টের জীবনে সফলতার গল্প

সফলতার শিক্ষনীয় গল্প নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি আমাদের এই ওয়েবসাইটে। এই স্টোরিটা আপনাকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে।সফলতার ছোট গল্প হিসাবে এই স্টোরি টা আপনার কাছে নোট আকারে রেখে দিতে পারেন।

পৃথিবিতে অনেক ধনি ব্যাক্তি আছে যারা স্ব-নিমির্ত ধনি। নিজের চেষ্টায় ধনী হয়েছেন তার মধ্যে জ্যাক মা হলেন একজন। যে কিনা জিরো ইনভেস্ট দিয়ে দিয়ে শুরু করে এখানে এসেছেন।

চীনে যখন কমিউনিস্ট শাসন ছিলো তখনই জ্যাক মা এর জন্ম। জ্যাক মা এর বাবা – মা ছিলো নিম্ন মধ্যে বিত্ত এর একজন ঐতিহ্যবাহী সংগীতশিল্পী-গল্পকার।

জ্যাক মা এক ইন্টারভিউতে বলেছিলো ১৯৭২ সালের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন হ্যাংজু সফর করেছেন। মি. নিক্সন চেয়েছিলেন চীনের পযর্টন পরিস্থিতি উন্নতি করতে। এটাকে কাজে লাগাতে জ্যাক তার একটা সাইকেল ছিলো এটা নিয়ে তার শহরের কাছাকাছি পার্কে চলে আসতো।

কষ্টের জীবনে সফলতার গল্প

এই সুযোগ কে কাজে লাগানোর জন্য। তার ছোট বেলা থেকে ইচ্ছে ছিলো ইংরেজীতে কথা বলার। অনেক সময় দেখা যায় ফ্রি সার্ভিস ও কোটি টাকার সমান হয়ে দাড়ায়।ঠিক তেমনি বিদেশীদের বিনামূল্যে ইংরেজি ট্যুর দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে যেতো । কারণ তার তো লক্ষ্য ছিলো ইংরেজি শেখার, এটাই ছিলো সুবর্ন সুযোগ। জ্যাক মা মনে করতো এটা আমার সফলতার গল্প, এটাতে আমার শান্তি।

জ্যাক, ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে স্নাতক করেছেন তার শহরে পাশের একটা Hangzhou Dianzi University-এ মাসে $12 ডলারে বাংলা টাকায় ৳১৩০০ টাকার বেতনে একজন ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন!

“মানুষের জীবন এর মোড় কোথা গিয়ে দাড়াবে কেউ বলতে পারে না “

একজন ব্যর্থ মানুষের গল্প ব্যর্থ থেকে সফলতায় পরিণত করেছেন যেভাবে?

জ্যাক মা একজন অত্যন্ত সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যিনি সবেমাত্র এক মুহূর্তে মধ্যে বিলিয়নিয়ার হয়ে গেছেন এমন না। তাঁর বিজনেস ৩ বছর কোন প্রোফিট হয়নি। জিরো প্রফিটেও সে ব্যবসা চালিয়ে যেতে নিজেকে অনুপ্রাণিত করেছে।

নিয়তি সবসময় মানুষের পাশে থাকে না । আপনি কতবার ব্যর্থ হলেন এতে কিছু যায় আসে না, তবে আপনি একবার সফল হলে এটা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যাবে। সবাই সফলতার গল্প শুনতে চাই ব্যর্থ মানুষের গল্প কেউ শুনতে চাই না।

ছোট কালে জ্যাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় একবার না ২ বার ফেল করেছে এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৩ বার ফেল করেছে। অবশেষে হ্যাংজু নরমাল ইউনিভার্সিটিতে যোগদানের আগে জ্যাক তিনবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। ১০ বার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন এবং চিঠি লিখেছিলেন – এবং প্রতিবারই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। একজন লোক এতোবার ব্যর্থ হওয়ার পরও একবারে জন্য সে পিছু হাটেন নাই।

তার পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির জন্য চেষ্টা করেন কিন্তু চাকরি পেতে ব্যর্থ হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে এই বিশ্বিবদ্যালয়ের ৩০ বার চাকরি আবেদন করেন বরাবরই মতোই ব্যর্থ হন। হয়তো আল্লাহ তার জন্য উওম কিছু রেখেছিলো তাই এতোবার ব্যর্থ হওয়ার পরও হাল ছেড়ে দেন নাই।

ব্যর্থ মানুষের গল্প

এবার একটু ভেবে দেখুন তো আপনি, আমি হলে কি করতাম।

চীনে যখন KFC প্রথম আসে ২৪ জন লোক চাকরীর জন্য গিয়েছিল সেখান থেকে ২৩ জনের চাকরি হয় একমাত্র জ্যাক মা এর চাকরি হয়নি। ভাগ্য কি এমন করে শুধু ওনার ক্ষেত্রেই। শুধু KFC তে না পুলিশ বাহিনি তে ও একই ঘটনা ঘটে।তার শহরে পুলিশ ফোর্সে ভর্তি জন্য আবেদন করেন ৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৪ জনের চাকরি হয় একমাত্র ওনার চাকরি হয় না। এক সাক্ষাৎকারে এসব নিশ্চিত করেন জ্যাক মা।

একবার ভেবে দেখুন যদি জ্যাক মায়ের চাকরি হতো তাহলে আজকে সে হয়তো পুলিশের চাকরি করতো, বিলিয়নার হতে পারতো না। স্বপ্ন দেখতে হাজার বাঁধা কোন কাজে আসে না। আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন তাহলে এটাকে বাস্তবায়নের জন্য আপনি যা যা ত্যাগ করার আছে তাই করুন।
স্বপ্ন দেখবেন, স্বপ্ন পূরণ করবেন তাহলেই তো আপনি সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। সফল তো তখনই হবেন যখন আপনি স্বপ্ন দেখবেন।

তিনি পুলিশ বাহিনীতে চাকরির জন্য 5 জন আবেদনকারীর মধ্যে একজন ছিলেন এবং একমাত্র তিনিই প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন যখন বলা হয়েছিল, “না, তুমি ভালো নেই।”

এছাড়াও, তার উদ্যোক্তা উদ্যোগে, জ্যাক মা তার দুটি প্রাথমিক উদ্যোগে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু এটি তাকে বড় স্বপ্ন দেখতে কোনোভাবেই বাধা দেয়নি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *