নিজেকে তৈরি করার উপায়

নিজেকে তৈরি করার উপায়? সফলতার সিঁড়িতে ওঠার কৌশল

আমরা সবাই সফল হতে চাই তবে কি করে নিজেকে তৈরি করার উপায় খুঁজতে হয় তা আমরা জানি না। সফলতার মূল ভিত্তি হলো নিজেকে সফল ভাবে তৈরি করা।

নিজেকে তৈরি করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে জীবনে বড় কিছু অর্জন করার শক্তি। আজকের এই ব্লগ পোস্টে আলোচনা করব কীভাবে নিজেকে তৈরি করা যায়?

কি করলে নিজেকে সবার চাইতে আলাদা ভাবে তৈরি করতে পারবো?

নিজেকে তৈরি করা আর নিজেকে অন্য থেকে আলাদা করা ভিন্নতা আছে অনেক।নিজেকে অন্যর চাইতে বেশি জানতে হবে, নিজেকে অন্যর চাইতে বেশি উজ্জ্বল দেখাতে হবে।

সবার আগে নিজেকে ভালোভাবে বুঝতে হবে তারপর আপনি অন্যর থেকে আলাদা কি করতে পারবেন সেটা নিয়ে ভাবতে পারবেন।

নিজের সম্পর্কে জানাটা হলো আত্মউন্নয়নের প্রথম ধাপ। আপনি যদি জানেন আপনার শক্তি কোথায়, দুর্বলতা কী, তবে সেই অনুযায়ী নিজের পরিকল্পনা সাজাতে পারবেন। নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী মানুষ বড় হয়, নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে আপনার ঘাটতি কোথায় আছে সেগুলো অনুধাবণ করতে পারবেন।

নিজেকে তৈরি করতে হলে নতুন কিছু শিখতে হবে। নতুন শিখার দক্ষতা থাকতে হবে আপনার মাঝে। ব্যক্তিগত জীবনে কোন কোন স্কিলের দরকার তা বুঝতে হবে আপনার।বর্তমান সময়ের যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্কিল আছে সেগুলো শিখতে চেষ্টা করুন। নতুন কিছু করতে গেলে দেখবেন আপনার কাছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে যার জন্য আপনি প্রস্তুত ছিলেন না।

নিজেকে তৈরি করার এই প্রক্রিয়াটা কখনোই শেষ হয় না। ধৈর্য ও অধ্যবসায় দিয়ে নিজেকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে আপনাকে।

নিজেকে তৈরি করার উপায় খুঁজুন

জীবনে উন্নতির জন্য প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা ও নিজের ইচ্চা শক্তিকে জাগিয়ে তুলা। আমাদের মাঝে সবসময় গুরুপাক খাই আমরা নিজেদেরকে কেন ভালো মতো তৈরি করতে পারি না। আপনাদের এই সব প্রশ্নের উত্তর দিবো আজকে।

লক্ষ্য নির্ধারণ করা:

আমাদের প্রধান সমস্যা হলো আমাদের লক্ষ্য ঠিক থাকে না। আমরা জানি না আমাদের লক্ষ্য কেমন হওয়া উচিত, কি করলে আমাদের লক্ষ্য ঠিক হবে। লক্ষ্য ঠিক না থাকলে আপনি এগোবেন কি করে। মনে করুন আপনি আজকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাহির হলেন, তবে আপনি জানেন না কোথায় ঘুরতে যাবেন। তখন আপনি কোথায় গিয়ে দাড়াবেন ভেবেছেন।আপনি যদি বাড়ি থেকে বাহির হওয়ার সময় ভাবতেন আমি আজকে ওই জায়গায় যাবো, ওই খানে গিয়ে ৩০ মিনিট ঘুরবো, আরেক জায়গায় গিয়ে একটা চা বা কপি খাবো তাহলে সময় মতো ঘুরে আপনি বাড়িতে চলে আসতে পারতেন।

আরও পড়তে পারেন

নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় (৬ মাসে নিজেকে তৈরি করার উপায়)

অভ্যাস পরিবর্তন করার উপায় (৭টি কার্যকর পদ্ধতি)

হতাশা থেকে মুক্তির উপায়:নতুন ভাবে জীবন শুরু করার কৌশল

জীবন বদলে দেওয়ার মতো মোটিভেশনাল ছোট গল্প

এটাতো একটা ঘুরাঘুরি জন্য উদাহরণ, আমাদের জীবন টাও তেমন, আমাদের কোন লাইফ গোল নাই। আমরা কোথায় যেতে হবে কি করতে হবে আমরা এখনো জানি না। আজ থেকে শুরু করে দিন আপনার লক্ষ্য, আপনার লক্ষ্য এক বা দুই দিনের লক্ষ্য হওয়া উচিত না।৪-৬ বছরের জন্য নিজের লক্ষ্য ঠিক করে কাজে নেমে যান ইনশাআল্লাহ আপনি সফল হবেন।

আত্মবিশ্বাস বাড়ান:

আত্মবিশ্বাস ছাড়া জীবনে সফল হওয়া অসম্ভব। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে সাহসী হতে হবে। অন্যদের মতামতের চেয়ে নিজের বিশ্বাসকে বেশি গুরুত্ব দিন। কোন কিছু করতে গেলে আমাদের নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকে না তেমন।

নিজের ওপর আত্নবিশ্বাসী হওয়া জুরুরি।যা করবেন নিজের বুদ্ধি আর নিজের সাহস এর সাহায্যে করবেন। নিজের ওপর সাহস থাকলে আপনি যে কোন ধরনের কাজ করতে পারবেন সহজ ভাবে।

নতুন দক্ষতা অর্জন করা:

প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজেকে আরও দক্ষ করা যায়। নতুন স্কিল অর্জন করতে পারলে নিজেকে সব জায়গায় মানিয়ে নিতে পারবেন সহজে।বই পড়া একটা স্কিল, খাবার খাওয়া ও একটি স্কিল এবং পানি পান করাও একটা স্কিল এর মধ্যে পড়ে।

আমরা মনে করে থাকি, স্কিল হলো কোন কিছু কাজ শিখাকে ।এটাও যেমন স্কিল ঠিক তেমনি নতুন কিছু শিখা যেমন কি করে যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে বাড়ানো যায়, কি করে নিজেকে আরো স্মার্ট করা যায়। নিজের রাইটিং এবং শোনার ধরণ পাল্টানো যায় এটাও একটা স্কিল।

ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তোলা:

ইতিবাচক মনোভাবই জীবনকে সহজ এবং সুন্দর করে তোলে। ব্যর্থতা আসলেও তাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাওয়া যায় যদি আপনার কাছে অভিজ্ঞতা থাকে।প্রতিদিন কিছু সময় নিয়ে নিজের ভাবনা নিয়ে ভাবতে থাকুন এবং নেতিবাচক চিন্তাভাবনা গুলো চিহ্নিত করুন। সেই চিন্তা ধারাগুলো ইতিবাচক চিন্তায় পরিবর্তন করতে চেষ্টা করুন।

প্রতিদিনের কাজের হিসাব রাখুন, একটা ডায়েরি তে নোট করে রাখুন আপনি ডেইলি কি কি কাজ করতেছেন সেটা নোট রাখলে আপনি সেটা নিয়ে রিসার্চ করে জীবনে উন্নত করতে পারবেন।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা:

সুস্থ শরীর মানেই সুস্থ মন।শরীর ভালো থাকলে আপনার মন ভালো থাকবে।শরীর ভালো জন্য শারীরিক ব্যায়াম করা, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং ভ্রমণে যাওয়া। ব্যায়াম আপনাকে শরীরের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্যে করবে।

পেশী শক্ত থাকলে, আপনার ভিতরে অলসতা কাজ করবে না। আমরা অলস, আমার কাজ করতে ভালোবাসি না তবে অলসতা করতে ভালোবাসি। অলসতা কাটিয়ে ওঠতে হলে রেগুলার ব্যায়াম করতে হবে আমাদের।

ধৈর্য ধারণ করা:

সবকিছুর মূল হলো ধৈর্য ধারণ করা, আপনার যদি ধৈর্য থাকে তাহলে আপনি সব কিছুতে সফল হতে পারবেন।সফলতার চাবিকাঠি হলো ধৈর্য ধারণ করা, যদি ধৈর্য্য ধারণ করতে পারেন তাহলে আপনার লাইফ পরিবর্তন এর দিকে চলে যাবে। জীবনের উন্নতি রাতারাতি আসে না। ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে এবং নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকলে সফলতা আসবে।

ধৈর্য ধারণ করে বসে থাকলে, আপনি সফলতার মূল কান্ডে পৌঁছাতে পারবেন। সফলতা এমনি এমনি ভাবে আস না, সফলতা আনতে হলে অনেক কিছু ত্যাগের বিনিময়ে আসে।

ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া:

মানুষ ব্যার্থ না হলে সফলতার মূল্য বুঝতো না।আপনি ব্যার্থ মানে আপনার জীবন শেষ না। আপনার জীবন এখনো আছে।ব্যার্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া মানে হলো জীবনকে উন্নত করা। যখন আমরা ব্যর্থ হই আমরা মনে করে থাকি আমাদের জীবনের ইথি এখানে।

ব্যর্থতাকে আমরা বোঝা মনে না করে, জীবনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ব্যর্থতাকে একটা ভালো দিক হিসাবে বিবেচনা করে সামনের দিকে এগোনো উচিত।

যখন আপনি ব্যার্থ হবেন তখন সেটা নিয়ে ভালো মতো রিসার্চ করতে থাকুন আপনি কেন এটাতে Failure হলেন।

  • ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করুন ভালো মতো।
  • কি জন্য আপনার ওই কাজ বা পজেক্ট ব্যার্থ হয়েছে সেটা ভালো মতো দেখুন।
  • নিজের ভুলগুলো চিহ্নিত করতে শুরু করুন।
  • ভুল চিহ্নিত হলে সেটা উন্নতির কি কি সুযোগ আছে তা অনুধাবণ করুন।
  • সবগুলোকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখুন।
  • ভলো মতো লক্ষ্য করুণ, আপনার ভবিষ্যতে যেন পুনরায় এমন ঘটনা না ঘটে।
  • অভিজ্ঞতা হিসেবে গ্রহণ করুন ওই কাজ কে যে কাজে আপনি ব্যার্থ হয়েছেন।
  • আপনার কাছের মানুষ থেকে সাহায্য নিন।
  • ব্যার্থতা কাটিয়ে ওঠতে তাদের সহোযোগিতা কামানা করুন।
  • নিজের ধৈর্যের পরিচয় দিন।
  • বলুন আমি অনেক শক্তিশালী আমাকে এই ব্যার্থতা কিছু করতে পারবে না।
  • পরিবর্তন আনুন আপনি যে কাজে ব্যার্থ হয়েছেন সেটা আবার করতে চেষ্টা করুন।তবে সেটা ভিন্নভাবে করতে চেষ্টা করুন।

নিজেকে মূল্যায়ন করুন:

আমরা নিজেকে মূল্যায়ন করতে জানি না, নিজের মূল্য অপরিসীম। আমাদের কাছে সোনার খনি থাকলে ও আমরা সেটাকে মূল্যায়ান করতে জানি না। সোনার খনি বলতে আপনার কাজের দক্ষতাকে বোঝানো হয়েছে। আপনার কাজের সব রেকর্ড থাকলে আপনি সেগুলো কে রিভার্স দিয়ে নতুন করে করতে পারেন।

এগুলো হলো আপনার সোনার খনি। টাকা পয়সা আপনার সোনার খনি না।আপনার স্কিল, আপনার দক্ষতা, আপনার ব্যবহার এগুলো আপনার খনি।
এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন কোন দিকগুলোতে আরও উন্নতির প্রয়োজন এবং কীভাবে আরও ভালো করা যায়।

সময়ের সঠিক ব্যবহার করুন:

সময়ের কাজ সময় মতো করতে পারি না আমরা এটা আমাদের জীবনের বড় ধরনের ব্যার্থতা বটে। আমরা পরিকল্পনা করি এক রকমের করতে গেলে হয়ে যায় অন্যরকমের।সময়ের সঠিক ব্যবহার শিখতে হলে আপনাকে বই পড়তে হবে ভালো মতো। টাইম ম্যানেজমেন্ট এর মতো বই পড়তে পারেন, দ্যা মিরাকল মনিং এর মতো বই পড়তে পারেন।

এই সব আপনাকে শিখাবে কি করে আপনার সময় মূল্যায়ন করা যায়। সময়কে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে জীবনে অনেক কিছু মিস হয়ে যাবে।

নিজেকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া:

নিজেকে চ্যালেঞ্জ এর মুখে রাখুন, নিজেকে সবসময়ই বিভিন্ন রকমের টাস্ক দিতে চেষ্টা করুন। নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করুন যেকোনো বিপদে আপদে আপনারা এটাকে মোকাবিলা করতে পারবেন সহজে। ছোট ছোট টাস্ক দিতে শিখুন, নিজেকে কঠোর করতে শিখুন।

যত কঠোর হবেন তত আপনি কঠিন কাজগুলো ভালো মতো করতে পারবেন। আপনি একজন চাকরিজীবী আপনার কাজের Performance এর ওপর নির্ভর করে আপনার প্রমোয়ন এবং আপনার সেলারি। আপনি কত টাকা সেলারি ডির্জাব করেন এটা মূলত আপনার কাজের গতিই আপনাকে বলে দিবে।

কাজের গতি বাড়তে হলে নিজেকে কঠোর হতে হয়। নিজে কঠোর হলে নিজের ক্যারিয়ার দীর্ঘ সময় চলতে পারে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *