অনলাইন ইনকাম কি হালাল
|

অনলাইন ইনকাম কি হালাল: কি বলছে ইসলাম

আমরা তো অনলাইনে আয় করার জন্য পাগল হয়ে যায় তবে আপনি কি জানেন অনলাইন ইনকাম কি হালাল? নাকি হারাম! প্রত্যেক মুসলমানের জন্য হালাল ইনকাম করা বাধ্যতামূলক।

ইসলামে হালাল ইনকাম অর্থাৎ বৈধ উপায়ে আয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম দৃষ্টিতে হালাল ইনকামের মানে হচ্ছে এমন আয় যা ইসলামের নিয়ম ও শর্ত মেনে আয় করা হয়।

হালাল ইনকাম কি?যে ব্যাক্তি পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর ওপর ভিত্তি নিজের হাতে পরিশ্রম করে যে ইনকাম করে সেটাকে হালাল ইনকাম বলে। হালাল ইনকাম নিয়ে একটা হাদিস আছে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বহস্তে পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করল, কিয়ামতের দিন সে নবীগণের সঙ্গে শামিল হবে এবং অনুরূপ পুণ্য লাভ করবে(জামিউল আখবার: ১০৮৭) হালাল ইনকাম কারির জন্য জান্নাতের দরজাগুলো খোলা থাকবে, হালাল উপার্জন কারি তার ইচ্ছামত জান্নাতি দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

দেখুন হালাল ইনকামের বিকল্প নেই,আপনার আয় পবিত্র ও ন্যায়সঙ্গত উপাযে হতে হবে।দেখুন ইসলামে অনেক কিছু মান করেছে তার মধ্যে হলো কোনো ধরনের প্রতারণা, জালিয়াতি, সুদ, জুয়া বা অন্যায় উপায়ে উপার্জিত আয় হালাল নয় এগুলো সম্পর্ন হারাম।

আপনি আপনার পরিবার কে যে ইনকাম টাকায় লালন পালন করেন সেটা তারা জানে না, আপনার হারামের টাকার ভার কিন্তু তারা নিবে না সবই আপনার থেকে নিতে হবে।পরিবার চাই আহার, আপনার চাই টাকা সেই টাকা কি করে আসলো পরিবার জানতে পারবে না।

ছোট একটা গল্প শুনেছিলাম, একজন ঝূষি একটা জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছিল হঠাৎ করে তাকে একটা ডাকাত এর লোক ধরে ফেলে আর বলে আপনার যা আছে সব আমাকে দিয়ে দিন, ঝূষি বললো ঠিক আছে দিয়ে দিবো।

ঝূষি

আমাকে একটা কথা বলো তো, তুমি যে ডাকাতি করো সেটা কার জন্য করো। ডাকাত বললো আমি আমার পরিবারের ভরণ পুষুন এর জন্য ডাকাতি করে থাকি।ঝষি বললো সেটা কি তোমার পরিবার জানে। ডাকাত লোকটি বললো না, তুমি আমাকে এখানে রেখে তোমার পরিবার থেকে জিঙ্গেস করে তো তোমার পাপের ভার কি তারা নিবে।

ওই ডাকাত তার পরিবারে কাছে গিয়ে জিঙ্গেস করলো আমি যে এতো কষ্ট করে তোমাদের জন্য ডাকাতি করে সংসার চালাই আমার পাপের বোঝা কি তোমরা নিবে। পরিবার বললো না, আমরা তো জানি না তুমি কি করে আয় করো বা না করো সেটা তোমার ব্যাপার আমরা কেন তোমার পাপের ভাগিদারী হবো। ডাকাত লোকটি মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো আমি এতো দিন কি করলাম, ঝষি কাছে এসে ক্ষমা চাইলো আর বললো আমি আর ডাকাতি করবো না।

আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আমার পরিবারে জন্য ভরন পুষুন করতে গিয়ে আমি নিজেই নিজের ধ্বংস ডেকেছি। এটাতো একটা গল্প কিন্ত এটাই সত্যি পরিবার বলেন, বন্ধু বলেন কেউ পাপের বোজা কাধে নিবে না।আপনাকেই আপনার পাপের বোঝা নিতে হবে।

আজ থেকে আমরা ইসলামে যেসব আয় কে হারাম বলে গণ্য করেছে সেগুলো কে পরিহার করবো ইনশাল্লাহ।

অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম সম্ভব কি

অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম করা অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু এর জন্য নিশ্চিত হতে হবে যে যেসব পদ্ধতিতে আপনি আয় করতেছেন সেগুলি সম্পূর্ণরূপে বৈধ এবং ইসলামের নিয়ম মেনে আয় হতে হবে তাহলে এটা বৈধ আয় বা হালাল আয় হবে। অনলাইনে কিছু হালাল উপায়ে ইনকাম করার পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো:

1. অনলাইন বিজনেস:

অনলাইনে আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতে পারেন। মাছ থেকে শুরু করে, দুধের, মুধুর ইত্যাদি নানা রকম ব্যবসা করতে পারেন। অনলাইন এখন অনেক বড় হয়েছে যার মাধ্যামে ব্যবসা করা ও এখন সহজ হয়ে গেছে।ব্যবসার মূলধন হলো সৎ ও ন্যায়সঙ্গত উপায়ে ব্যবসা করা।

অনলাইনে বিজনেস

2. অনলাইন চাকরি:

আগে জানতাম চাকরি তো অফিসে গিয়ে করতে হয় তাহলে ঘরে বসে কি করে অনলাইনে চাকরি করবো। অনলাইন পরিসর হওয়াতে এখন সবই হাতের মুঠির মধ্যেই চলে এসেছে।আপনি চাইলে বিভিন্ন রিমোট জব করতে পারেন ঘরে বসে। গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে শুরু করে সোশাল মিডিয়ায় ম্যানাজার ইত্যাদি অনেক কাজ করতে পারবেন।

3. কৃষিকাজ:

কৃষিকাজ হলো সবচেয়ে হালাল পন্তাভাবে আয় করা।পৃথিবিতে যত নবি রাসুল এসেছে সবাই কৃষি কাজ করেছে। আপনি যদি নিউটন কচু চাষ করেন তাহলে সেটাকে অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন, আপনার যদি মুরগির ফার্ম বা গরুর ফার্ম থাকে সেটাকে অনলাইনে পরিসর করে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে পারেন।

4.পেশাগত সেবা:

আপনি ডাক্তার বা আইনজীবী হন তাহলে এটা ও এখন অনলাইনে তাদের সেবকে তুলে ধরতে পারেন। অনলাইনে ওয়েবসাইট এর মাধ্যামে তাদের সেবাকে তুলে ধরতে পারেন। ওয়েবসাইট এর মাধ্যামে আপনিও আয় করতে পারবেন সহজে। আপনার সম্ভব্য ক্লাইন্ট হবেডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী ইত্যাদি।

5. ফ্রিল্যান্সিং কাজ:

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা বিশ্ববাজার পর্যন্ত হয়েছে। এই কাজ বৈধ। তবে এটাকে আপনি হারাম করতে পারেন যদি আপনার কাজের স্কিল না থাকে, সে কাজ পারি বলে নিয়ে ঠিক মতো করতে না পারলে সেটা ও হারাম হবে কারণ আপনি কাজ জানেন না।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ

না জেনে কাজ নিয়ে মানুষকে ঠকিয়ে লাভ আছে। বর্তমান সময়ে কিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হলো আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, পিপলপারহাওয়ার ইত্যাদি। এই সব মার্কেটপ্লেস আপনি হাজার হাজার কাজের বিড পাবেন যা বলার মতো না।

আপনি কাজ জানেন তাহলে এইসব মার্কেটপ্লেসপ আপনাকে স্বাগতম।মনে রাখবেন আমদের অজান্তে অনেক বৈধ কাজকে অবৈধ করে ফেলি আমাদের ভুলের কারণে।

অনলাইন টিউশন:

যারা টিউশন ভালো পড়াতে পারেন তাদের জন্য বড় সুযোগ এটি। আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ও দেখতে পারেন সেখানে ও এই অপশন আছে অনলাইন টিউটর এর। অনলাইন টিউটরের জন্য নিজের ওয়েবপেইজ শুরু করতে পারেন অথবা ফেসবুকে আর ইউটিউব এর মাধ্যামে ও শুরু করা যায়।বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন ক্লাস নিয়ে আয় করা ভালো একটা সুযোগ।

ব্লগিং :

বর্তমান সময়ে ব্লগিং হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় একটা মাধ্যাম। ব্লগিং শুরু করতে তেমন কষ্টিং প্রয়োজন হয় না। তবে ধৈয আর সময় নিয়ে শুরু করতে হবে।ব্লগিং কন্টেন্ট তৈরী করতে সময় লাগে তবে এই কন্টেন্ট থেকে আয় করতে সময় লাগবে না। গুগল নিজেও বলে কন্টেন্ট তৈরীতে সময় লাগে , এই কন্টেন্ট মনিটাইজেশন থেকে আয় করতে সময় কম লাগে। আপনি যদি এই বছর ব্লগিং শুরু করেন সেটা হবে সবচেয়ে মূলবান জিনিশ এবং এটা ও হালাল।

ইউটিউব:

ব্লগিং এর পর আসে ইউটিউব। আমরা ইউটিউব কাজ করতে চাই না তাই বেশির ভাগ মানুষ ব্লগিং করতে চাই। ইউটিউব গুগলের একটা প্রোডাক্ট। আপনি ইউটিউবই কনটেন্ট তৈরী করে ভালো আয় করতে পারবেন তবে ইউটিউব খারাপ বিজ্ঞাপন আসে সেটা বন্ধ করার উপায় নেই তবে ব্লগিং বন্ধ করা যায়।

হালাল টাকা আয় করতে হলে কি করতে হবে

হালাল টাকা আয় করতে হলে কিছু মূলনীতি অনুসরণ করতে হবে:

সৎ ও ন্যায়সঙ্গত উপায়ে আয় করা: প্রতারণা, জালিয়াতি, সুদ বা জুয়ার মতো হারাম উপায় থেকে বিরত থাকতে হবে।

ইসলামের নিয়ম মেনে চলা: সবসময় ইসলামের নিয়ম ও শর্ত মেনে কাজ করতে হবে।

পরিশ্রমী ও অধ্যবসায়ী হওয়া: কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে আয় করা।

বৈধ পেশা বেছে নেওয়া: এমন পেশা বা ব্যবসা বেছে নিতে হবে যা সম্পূর্ণরূপে বৈধ ও হালাল।

অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম সম্ভব কি?হ্যাঁ, অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম করা সম্ভব। তবে কাজের ধরন, পেমেন্ট পদ্ধতি, এবং কাজের পরিবেশ সবকিছুই ইসলামের নিয়ম মেনে হতে হবে। অনলাইনে অনেক বৈধ ও হালাল উপায় রয়েছে যেগুলি ব্যবহার করে একজন মুসলিম সহজেই ইনকাম করতে পারেন।

অনলাইন ইনকাম কি হালাল আয়: কি বলছে ইসলাম?


অনলাইনে আয় করা আজকের দিনে খুবই জনপ্রিয় ও প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, এই আয় কি ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল? ইসলাম ধর্মে হালাল আয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন মুসলিমের জীবনের মূল ভিত্তি গঠন করে হালাল ইনকাম করতে হবে, হালাল খাবার খেতে হবে।

আরও পড়তে পারেন:

হালাল ইনকাম এর জন্য কোন স্কিল সবচেয়ে ভাল

এড দেখে টাকা ইনকাম কি হালাল

টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে

কিভাবে ফ্রি টাকা ইনকাম করবেন 

প্যাসিভ ইনকাম: কিভাবে Passive Income শুরু করা যায় ( Case Study )

অনলাইনে আয় করার সময় ইসলামের নিয়ম মেনে চলা এবং হালাল উপায় অনুসরণ করা জরুরি। এইভাবে, একজন মুসলিম নিরাপদে এবং পবিত্র উপায়ে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন।

হালাল ইনকামের বিকল্প নেই

অনলাইনে হালাল উপায়ে টাকা আয় করা সম্ভব, তবে এজন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি:

  • পেমেন্ট মাধ্যম: কাজের ধরণ গেলো এবার আসলো টাকার উৎস, এমন কোন ব্যাক্তির কাজ করা যাবে না যার পেমেন্ট মাধ্যাম সুদ এবং জোয়ার সাথে সম্পর্ক আছে।
  • কাজের ধরন: নিশ্চিত করতে হবে যে কাজটি নৈতিক এবং ইসলামের নিয়ম মেনে চলছে। মনে করুন আপনি ব্লগিং শুরু করতেছেন, সেটাতে রিস্কি হয়ে যায় হালাল এবল হারাম দুইটোই মিস্কার হয়ে যায়। তবে করা যায়, সে জন্য কোন কাজ শুরুর আগে ধরন দেখে শুরু করতে হবে।
  • কাজের পরিবেশ: পরিবেশ ভালো হতে হবে। সব যায়গায় তো কাজ করা যাই না। কাজের ধরণ বা কাজের পরিবেশ যদি খারাপ হয় তাহলে তো আপনি কাজ করতে পারবেন না। যেমন একটা জোয়া আসক্ত পরিবেশে তো আপনি কাজ করে আয়করাটা কার্যক্রম হালাল ও ন্যায়সঙ্গত হবে না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *