বিজ্ঞানের বই
|

৮ টি বিজ্ঞানের বই যা পড়া উচিত সবার – Msterblog.com

কিছু বিজ্ঞানের বই যা পড়া উচিত সবার !আমদের চারপাশ ঘিরে রয়েছে বিজ্ঞানের কারসাজি। তাই প্রত্যেকের অন্তত সাধারণ বিজ্ঞানের বিষয় গুলো জানা থাকা আবশ্যক। তাই আজ এমনই কিছু বিজ্ঞানের বই সম্পর্কে কথা বলব যা আমাদের বিজ্ঞানভীতি কিছুটা হলেও কমাবে।

১.রোগ জীবাণুর গল্প-সঞ্জয় মুখার্জী

 

এই করোনা মহামারীর মাঝে যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তা হলো ভাইরাস। ভাইরাস কি? কিভাবে সৃষ্টি হয় ভাইরাস? কোথায় এদের বসতি?

এসব প্রশ্ন একবার না একবার নিশ্চয় আপনার মাথায় এসেছে। এইসব ভাইরাস , ব্যাকটেরিয়া নিয়ে জানতে পড়ে ফেলতে পারেন সঞ্জয় মুখার্জীর রোগ জীবাণুর গল্প বইটি।

বইটির লেখক একজন অনুজীব বিজ্ঞানের শিক্ষক ,পড়ান নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে তার বইটি লিখেছেন খুবই প্রাঞ্জল ভাষায়। বইটিতে রয়েছে বিভিন্ন রোগ জীবাণু আবিষ্কারের পেছনের গল্প ,রয়েছে মানুষের শরীরে কোথায়  এদের আস্তানা সে সম্পর্কিত কথা ।এছাড়া অধ্যায় গুলো সাজিয়েছেন বিভিন্ন মজাদার নামে ‘কলেরা চাচ্চু’,’মশা সর্বনাশা’,’জীবাণুর নাতিপুতি’ ইত্যাদি নামে । তাই কিশোর কিংবা তরুণ সকলেই পড়ে ফেলতে পারেন বিজ্ঞানের এই বইটি।সফলতা কী? মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ভিতরে লুকিয়ে থাকে সফলতা

২.এটাই সাইন্স –হাসান উজ-জামান শ্যামল

 

বাংলাদেশ নিয়ে আমরা প্রায় সময় হতাশ হই।দেশে কোন গবেষণা হয় না এটাই আমাদের হতাশার বিষয় ।কিন্তু বাংলাদেশে বসেও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা হচ্ছে । সেরকমই কিছু বাংলাদেশের গবেষনণা সম্পর্কে লিখেছেন হাসান উজ-জামান শ্যামল। বইটির নাম হলো এটাই সাইন্স ।

সদ্য  ২০২২ বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে বইটি ।বইটিতে রয়েছে আমদের দেশের বিভিন্ন মহামারীর সমাধান বিজ্ঞানীরা কিভাবে খুঁজে বের করেছেন, রয়েছে কিভাবে বিজ্ঞান কাজ করে সে সম্পর্কে ধারনা। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা কিভাবে কাজ করে চলছেন সে সম্পর্কে জানতে কিনে ফেলতে পারেন এই জীব বিজ্ঞানের এই বইটি ।৭ টি বিষয়ের উপর সফল ব্যাক্তিরা সময় নষ্ট করে না

৩.গল্পে জল্পে জেনেটিক্স-চমক হাসান

 

জেনেটিক্স সম্পর্কে আমাদের সবারই কম বেশি আগ্রহ আছে । বাবার চোখের রং কালো আর মায়ের চোখের রং বাদামি হলে সন্তানের চোখের রং কেমন হবে? পিতা-মাতার একজন লম্বা আরেকজন বেটে হলে সন্তানের উচ্চতা কোন ভিত্তিতে নির্ণয় হবে ? এসব কিছুর পেছনে রয়েছে জেনেটিক্স । জেনেটিক্স সম্পর্কে ধারনা পেতে তাই পড়ে ফেলতে পারেন চমক হাসানের লেখা গল্পে জল্পে জেনেটিক্স  বইটি।

বইটি লেখা হয়েছে দুই খণ্ডে কমিক আকারে ।বই পড়ে মনে হবে না আপনি কোন বিজ্ঞানের বই পড়ছেন বরং মজাদার কোন কমিকস পড়ছেন ।সেই সাথে জানতে পারবেন জেনেটিক্সের জগৎ সম্পর্কে । তাই আর দেরি না করে ঘুরে আসুন জেনেটিক্সের জগৎ থেকে।

৪.পদার্থ বিজ্ঞানের মজার কথা ১ ও ২   -ইয়াকভ পেরেলম্যান

 

আমদের চারপাশে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে পদার্থবিজ্ঞান ।আমরা জেনে না জেনে  দৈনিন্দন জীবনে ব্যবহার করে যাচ্ছি পদার্থবিদ্যা। সেরকমই কিছু মজার ঘটনা নিয়ে বইটি লিখেছেন রাশিয়ান লেখক ইয়াকভ পেরেলম্যান। ১৯১৩ সালে বইটির প্রথম মুদ্রণ হয় ১৯৩০ সালে আসতে আসতে বইটির প্রায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে চলে আসে। এখন পর্যন্ত ধারণা করা হয় ২০ লক্ষেরও বেশি বিক্রি হয়েছে বইটি। বহু ভাষায় অনূদিত এই বইটি বাংলাভাষায়ও অনূদিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রকাশনী এর অনুবাদ বের করেছে ।বইটি লেখা হয়েছে দুই খন্ডে ।

বইটিতে পদার্থবিদ্যার সাধারন বিষয় গুলো নিয়ে বলা হয়েছে । শুধুমাত্র যে বিজ্ঞানের ছাত্ররাই বইটি পড়তে পারবে এমন নয় যে কেউ বইটি পড়ে ঝালিয়ে নিতে পারে পদার্থ বিষয়ক কমন ধারনা গুলো। ফরাসী এক রম্য লেখক তার এক রচনায় লিখেছিলেন তিনি তার যন্ত্রপাতি সহ কয়েকঘণ্টা মাটি থেকে উপরে ভেসে রইলেন কয়েকঘণ্টা পর নেমে এসে দেখলেন তিনি কানাডা পৌছে গেছেন ।

কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? তখন তিনি যুক্তি খাড়া করলেন যেহেতু পৃথিবী ঘুরছে তাই তিনি যখন শূণ্যে ভেসে ছিলেন তখন পৃথিবি ঘুরে গিয়েছে যার ফলে তিনি ফ্রান্স থেকে কানাডা পৌছে গিয়েছেন ।

আরও দেখতে পারেন:

পদার্থ বিজ্ঞানের মজার কথা বইয়ে এমনই সব মজার গল্প দিয়ে লেখক বুঝিয়েছেন এসব সম্ভব কিনা। তবে গল্প বলতে গিয়ে  মূল উদ্দেশ্য বিজ্ঞান শেখানো থেকে তিনি সরে যান নি বরং খুবই সুন্দর ভাবে তিনি বইয়ে সেসব ফুটিয়ে তুলেছেন।

৫. আরো একটুখানি বিজ্ঞান-মুহম্মদ জাফর ইকবাল

 

লেখক বাঁধাধরা কোন টপিক্সে না গিয়ে বরং  বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বইটি সাজিয়েছেন। বিজ্ঞানীদের জীবনী,প্রযুক্তি,মনোবিজ্ঞান,জীববিজ্ঞান,পদার্থবিদ্যা,জোর্তিবিদ্যা,রসায়ন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বইটি সাজানো হয়েছে।

বইটির প্রথম খন্ড একটুখানি বিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়েছে বিজ্ঞানের বিভিন্ন জনপ্রিয় বিষয় নিয়ে,অপটিক্যাল ফাইবার,স্ট্রিং থিওরী,আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক,কোয়ান্টাম মেকানিক্স সহ অনেক মজাদার বিষয়। লেখক যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানের মানুষ তাই প্রথমখন্ডে পদার্থবিজ্ঞানের উপর প্রবন্ধ তুলনামূলক বেশি আছে । আরও পড়তে পারেন ৫টি ফ্রিল্যান্সিং স্কিল যার চাহিদা থাকবে সবসময়

পদার্থবিজ্ঞানের বাইরে যেসব প্রবন্ধ আছে সেসব ও কম আকর্ষণীয় না। যেমনঃ মানুষের স্বপ্নের রহস্য,REM বা স্বপ্ন দেখলে কেন চোখের পাতা নড়ে সে সম্পর্কে প্রবন্ধ। দ্বিতীয় খন্ডেও এরকম বিভিন্ন রসালো বিষয় নিয়ে প্রায় ৩১টি প্রবন্ধ আছে ।

বই দুটোর নাম একটু খানি বিজ্ঞান হলেও বইটি পড়ে অনেক বিষয়ের বিজ্ঞান  সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন,পারবেন বিজ্ঞানের রস আস্বাদন করতে। তাই দেরি না করে পড়ে ফেলতে পারেন এই বইটি।

৬.রসায়নের গোড়ার কথা-সৌমেন সাহা

 

বইটি নাম শুনেই হয়তো বুঝতেই পারছেন বইটি লেখা হয়েছে রসায়নের শুরুর কথা নিয়ে।আলকেমি থেকে কিভাবে আধুনিক রসায়নের জন্ম হলো ? কিভাবে রবার্ট বয়েলের অনুসন্ধান ও গবেষণার ফলে আলকেমি ও

রসায়নের পার্থক্য সূচিত হলো,সেসব কথাই উঠে এসেছে এই বইয়ে।গ্লিসারিন থেকে বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার,ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুনাইন বানাতে গিয়ে কিভাবে তৈরি হলো রঞ্জক পদার্থ বা বেগুণী রং,পলিমার আবিষ্কার সহ রসায়নের বিভিন্ন ইতিহাস। বইটিতে জৈব রসায়নের বিভিন্ন আবিষ্কারের কাহিনীর উপরই মূলত আলোকপাত করা হয়েছে ।

তাই রসায়নের ইতিহাসে আগ্রহ থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন এই বইটি  ।৫টি ফ্রিল্যান্সিং স্কিল যার চাহিদা থাকবে সবসময়

৭.কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস- স্টিফেন হকিং

 

A brief history of time (কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস) এই বইটির মাধ্যমেই মূলত স্টিফেন হকিং জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহ থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন বইটি। লেখক মূলত এমন একটি বই লিখতে চেয়েছিলেন যেটা সকলেই বুঝতে পারবে সাধারণত  বিজ্ঞানের বিষয় গুলো নিয়ে লিখিত বই গুলো হয় কাঠখোট্টা ধরনের,বিভিন্ন জটিল ক্যাল্কুলেশন দিয়ে ভরা। তাই লেখক এই বইতে যথা সম্ভব সরল করে মহাকাশ বিজ্ঞানের বিষয় গুলো বুঝাতে চেয়েছেন । ৫টি ফ্রি এসইও কোর্স

আমাদের জানার দৌড় কতটুকু? মহাবিশ্বের শেষ কোথায়? কিভাবে সৃষ্টি হলো এত বিশাল বিশাল নক্ষত্রের?ব্ল্যাক হোল কি? ব্ল্যাল হোল কেন সব কিছু শুষে নেয়? ব্ল্যাক হোলের গহ্বর থেকে কি ফিরে আসা সম্ভব? আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা কি?

এরকম বিভিন্ন প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর রয়েছে বইটিতে। সেই সাথে বোঝার সুবিধার্তে যোগ করা হয়েছে পর্যাপ্ত ছবি। আমাদের দেশের বিভিন্ন পাবলিকেশন বইটির অনুবাদ বের করেছে,পছন্দমত প্রকাশনী থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন বইটি।

৮.স্যাপিয়েন্সঃ এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ হিউম্যানকাইন্ড -ইউভাল নোয়া হারারি

 

বইটি মূলত মানবজাতির ইতিহাসের উপর রচিত। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখক বইটি লিখেছেন।বইটি শুরু করা হয়েছে ১৫.৫ মিলিওন বছর আগের ঘটনা দিয়ে যখন উদ্ভব ঘটেছে অণু,পরমাণু ও শক্তির ।আর শেষ করা হয়েছে ভবিষ্যতের জন্য দুটি প্রশ্ন রেখে।

আমাদের চোখে যেসকল ঘটনা নিতান্তই সামান্য তেমনই সাধারণ ঘটনা গুলো কিভাবে ইতিহাসের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে সেসকল চমকপ্রদ বর্ণনা রয়েছে বইটিতে।

আরও দেখতে পারেন:

 

আগুন আবিষ্কারের যুগ থেকে বিংশ শতাব্দীর মানুষের উন্নত জিবনযাপন সবই ধাপে ধাপে বর্ণনা করেছেন লেখক এই বইটিতে।বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের বই না হলেও জীব বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে  ইতিহাস জানতে চাইলে এই বইটি অবশ্যই পড়া উচিত। তাই দেরি না করে পড়ে ফেলতে বিশ্বে সাড়া জাগানো এই বইটি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *