নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় (৬ মাসে নিজেকে তৈরি করার উপায়)
চাইলে তো হুট করে নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় খোঁজে বাহির করা যায় না তবে চাইলে নিজেকে পরিবর্তন করা যায় ৬ মাস মতো সময় নিয়ে। আমরা কি ৬ মাসে আমাদের জীবন পরিবর্তন করতে পারি। হ্যা! ধীরে ধীরে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে ধাপে ধাপে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আজকে অনেক বিষয় শেয়ার করবো, কি ভাবে নিজেকে পরিবর্তন করা যায়?
এই উওরটি কোরায় শেয়ার করেছিলাম, খুব কম সময়ের মধ্যে ফিউচার হয় কোরাতে এবং এই উওরটি কোরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তে প্রমোট করেছে কোরা কমিউনিটি ।
আপনি যদি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার উপায় খুঁজছেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
রাতে ঘুমালাম এবং সকাল উঠে তারপর বলবো আমি পরিবর্তন হতে চাই, তাহলে তো আপনি পরিবর্তন হতে পারবেন না! যদি সত্যি নিজের পরিবর্তন চান তাহলে সবার আগে নিজেকে সময় দিতে হবে।লক্ষ্য করে দেখুন কি কি বিষয়ে উপর আপনি পরিবর্তন চান সে বিষয়টি খাতায় লেখা শুরু করুন আজ থেকে।
আপনার পরিবর্তন আসুক আজ থেকে, পরিবর্তন কোন অজুহাত না পরিবর্তন হলো সময়ের ব্যাপার।
মনে রাখবেন হুট করে নিজেকে পরিবর্তন করা সম্ভব না ধীরে ধীরে নিজেকে পরিবর্তন করতে হয় সময়ের সাথে। আগে আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন? আপনি কেন পরিবর্তন চাচ্ছেন আসলে কি আপনার পরিবর্তন প্রয়োজন, নাকি কাউকে দেখানোর জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন এটা আগে ভাবুন। যদি ভাবা শেষ হয় তাহলে শুরু করা যাক
নিজেকে প্রচুর পরিবর্তন করতে হবে?
জীবনে যদি কোন কিছুর পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে কাগজ-কলম সাথে রাখুন। কাগজ-কলমে নিজের লক্ষ্য লিখে রাখুন। আপনি কেন পরিবর্তন হতে চাচ্ছেন, আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি,আপনি কি করতে চাচ্ছেন। সেটা আগে আইডেন্টিফায় করুন এবং এই অনুযায়ি নিজেকে সময় দেওয়া শুরু করুন। প্রথমত ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন কি পরিবর্তন করতে চান তা নির্ধারণ করুন।
nijeke poriborton korar upay খোঁজার চেষ্টা করেন তাহলে আপনি অনেক পিছিয়ে থাকবেন। কিভাবে নিজেকে উন্নত করা যায় এই চিন্তা না করে আমি নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই, এইটা নিয়ে কাজ করলে আপনি অতি তাড়াতাড়ি সফল হতে পারবেন।
আরও পড়তে পারেন :
অভ্যাস পরিবর্তন করার উপায় (৭টি কার্যকর পদ্ধতি)
হতাশা থেকে মুক্তির উপায়: নতুন ভাবে জীবন শুরু করার কৌশল
জীবন বদলে দেওয়ার মতো মোটিভেশনাল ছোট গল্প
আপনার মাঝে কোন ধরণের বাজে অভ্যাস আছে সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে খাতায় লেখে ফেলুন। তাঁর পর আপনার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে ফেলুন। আগামীতে আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান তা লিখে ফেলুন খাতায়।
এরপর আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য কি কি করতে হবে তা লিখুন। আগমাী ৬ মাস আপনি কি কি করতে যাচ্ছেন। ধাপে ধাপে নিজেকে চ্যালেঞ্জ মুখে ছুঁড়ে দিন প্রথমে ২১ দিনের চ্যালেঞ্জ দিন।
পরিবর্তন শুরুতে কোন রকমের বড় চ্যালেঞ্জ নিবেন না।ছোট্ট ছোট্ট চ্যালেঞ্জ নিন, মনে করুন আগে আপনি সকাল ১০ টাই ঘুম থেকে উঠতেন। রাত ২ টাই ঘুমাতেন এটা হুট করে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করবেন না।আগে রাত ২ টাই ঘুমাতেন আপনি ২১ দিনের চ্যালেঞ্জ এর মধ্যে রাখলে আজকে আপনি রাত ১.৫০ টাই ঘুমাবেন এবং পরের দিন রাত ১.৪০ টাই ঘুমাবো। তারপরের দিন রাত ১: ৩৫ টাই ঘুমাবেন এটা হলো পরিবর্তন এর শুরুর দিক।
আগে সকাল ১০ টাই ঘুম থেকে উঠতেন আপনি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পর সকাল ৯.৫৫ তে ঘুম থেকে উঠবেন। এই রকম ছোট ছোট পরিবর্তন নিতে চেষ্টা করুন দেখবেন ২১ দিন যেতে যেতে আপনি সকাল সকাল উঠা শুরু করবেন। আপনার শরীরে কোনো ক্ষতিও হবে না, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন।
২১ দিনের চ্যালেঞ্জ শেষ হলে তার পর ৯০ দিনের চ্যালেঞ্জ নিন আস্তে আস্তে আপনার জীবনের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করবেন।৯০ দিনের চ্যালেঞ্জ শেষ হলে আবার আসতে পারেন ফাইনাল রাউন্ডে ১৮০ দিনের চ্যালেঞ্জ। এই ১৮০ দিনের চ্যালেঞ্জ আপনাকে আপনার লক্ষ্য তৈরি করতে শিখাবে।
এবার আপনার লক্ষ্য নির্ধারন হয়ে গেছে। এই লক্ষ্য পূরনের জন্য আপনাকে সময় দিতে হবে আপনার কাছে আছে ২৪ ঘন্টা এই গুলোকে কাজে লাগতে হবে আপনার লক্ষ্য পৌঁছেনোর জন্য।
তুমি জীবনে কতবার হেরেছ তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ তোমার একটি জেতা হল সমস্ত হারের যোগ্য জবাব।
নিজেকে পরিবর্তন করার উপায়
- .সবার আগে সময় অপচয় করা বন্ধ করতে হবে।
- যদি সোশ্যাল মিডিয়ায়তে আসক্ত হোন এটা থেকে বাহির হতে হবে। আসক্ত না হলে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তে সময় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।ধরুন আপনি প্রতিদিন ৫-৬ ঘন্টা মতো মোবাইল ব্যবহার করেন এটাকে আপনার ছাড়তে হবে।প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।
- প্রতিদিনের জন্য একটা রুটিন তৈরি করুন। কখন ঘুম থেকে উঠবেন , কখন খাবার খাবেন একটা রুটিন ফলো করুন।মনে রাখবেন রুটিন যেন পরিবর্তন না হয়।
- তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে রাত ১০.৩০-১১.৩০ P.M সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে সকাল ৫.০০-৬.০০ A.M ।
- সকালে মন ফ্রেশ থাকে তাই তাড়াতাড়ি উঠতে হবে। মজার বিষয় হলো সকালে ঘুম থেকে উঠলে আরও অনেক কিছু উপকারীতা আছে।
- প্রথম অবস্থায় সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারবেন না।
- আস্তে আস্তে এটাকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।
- উপরে কলামে কি করে সকালে ঘুম থেকে উঠবেন এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তাই এখানে আলোচনা করা হচ্ছে না।
- সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে কী কী করবেন, তা ঠিক করুন। হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। বই পড়তে পারেন ৩০ মিনিট মতো। ১০-১৫ মিনিট হাটতে পারেন। আপনার মূল কাজটা জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন।
- নিজেকে কিভাবে পরিবর্তন করব বা করতে চাচ্ছেন। সেটার উপর কাজ করুন। আপনার গোলের উপর বিশেষ ভাবে কাজ করুন।
- প্রতিদিন নিজেকে মোটিভেট করুন, রাতারাতি সফল হবেন না। নিজেকে তৈরি করুন বিভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য।
- কোন কিছু পরিবর্তন আনতে হলে ২১ দিনের চেলেঞ্জ নিন, তার পর ৯০ দিনের চেলেঞ্জ নিন।তারপর ১৮০ দিনের চ্যালেঞ্জ তারপর দেখুন আপনার ভিতরে কি কি পরিবর্তন এসেছে।
- নিজের পরিকল্পনা তৈরি করুন, সে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করুন। প্রতিদিনের গোল, সপ্তাহের গোল, মাসিক গোল, ছয় মাসের গোল তার পর এক বছরের গোল। এই গোলের ওপর কাজ করুন আগামী ৫ বছরে আপনি লক্ষ কোথায় দাড়াতে চাচ্ছেন সেটা ঠিক করুন।
- নিজেকে কারও সাথে তুলনা করবেন না, শুধু এইটুকু নিজেকে বলবেন সবই আমার দ্বারা করা সম্ভব, আমি কেন পারবো না।
- দায়িত্ব নিতে শিখুন।
- মানুষের সাথে সর্বদা ভালো আচারণ করুন, ভালো ভাবে কথা বলুন।
- যখন রেগে যাবেন কাউকে কুটুর কথা বলবেন না, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
- হাল ছেড়ে দিয়েন না, হতাশ হবে না। নিজেকে সবসময় বলুন আমি এটা করতে পারবো।
- বই পড়ুন প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে। রাতে ঘুমানোর আগে ৩০ মিনিট বই পড়ুন। সকালে ঘুম থেকে ওঠে ৩০ মিনিট বই পড়ুন।
- প্রতিদিনের ডাইরি তৈরি করুন, কি করতেছেন সব ডাইরি তে লিখে রাখুন। অন্তত প্রতিসপ্তাহে এটাকে এনালাইস করুন, যাতে এই সপ্তাহে যা করেছেন তা আগামী সপ্তাহে আরও ভালো করতে চেষ্টা করুন।
- সময়ে সাথে চলুন, নিয়তির সাথে বোঝাপড়া করবেন না, যা হয়সে তা হয়সে।
- নিজের ইমোশন কে কন্টোল করুন, নিজের ইমোশন কে কন্টোল করতে না পারলে সব শেষ।
- হ্যা বলা বন্ধ করুন, সবসময় হা বলবেন না, না বলতে শিখুন।
- প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন মুসলিম হলে, আল কুরআন পড়ুন।
- ভুল করলে সরি বলুন। রাতে ঘুমানোর আগে সব কিছু ক্ষমা করে ঘুমান।
- অন্যর থেকে বেশি জানুন, কাউকে নিজের সাথে তুলনা করবেন না। সবসময় নিজেকে এটা বলুন I am Best.
- ইউটিউব বেশি সময় অপচয় করবেন না, ইউটিউব ব্যবহার করা ভালো, তবে ইউটিউবে সময় লস করা ভালো না। ফানি ভিডিও দেখবেন না, ইমোশনাল ভিডিও ও দেখবেন না, আপনার কাজ রিলেটেড ভিডিও দেখুন।
- নিজের গল্প নিজে তৈরি করুন, আপনার গল্প পড়ে যেন মানুষের জীবন পরিবর্তন করতে পারে এমন ভাবে নিজেকে তৈরী করুন। অন্যর গল্প থেকে শুধু শিক্ষা গ্রহণ করুন। আমি বলবো যারা অসফল তাদের সাথে কথা বলতে, কারণ তারা কেন অসফল তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনে কাজে লাগান।
- নতুন নতুন কিছু শিখতে চেষ্টা করুন। Never Stop Learning. প্রতিদিন নিজের শেখার পরিবেশে তৈরি করুন।নিজের ভুল থেকে শেখার চেষ্টা করুন।
- ভালো কাজের জন্য উৎসাহ দিন অন্যকে।
- বাস্তবতা কে মেনে নিন।
সবর্শেষ নিজেকে পরিবর্তন করতে হলে, আগে লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে তারপর সময় অপচয় বন্ধ করতে হবে। সময়ের মূল্য অপরিসীম। সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না।
আরও লক্ষ্য রাখতে হবে আপনি কি বিষয়ে নিজেকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন তা উপর নিজেকে সময় দিন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ এর মুখে ছুঁড়ে দেন নিজের টার্গেট নির্ধারন করুন আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে সেও এটা পড়ে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে নিজেকে চ্যালেঞ্জ নিতে শিখতে পারে।
আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।